হলের আবাসিকতা প্রদানে ইবিতে নতুন বৈষম্যের অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি ॥ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হল শহীদ জিয়াউর রহমান হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসিকতা প্রদানের ক্ষেত্রে নতুন বৈষম্য সৃষ্টির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। আবাসিকতা প্রদানের ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ঘোষণায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। পরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তিটি প্রত্যাহার করে সংশোধীত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে হল প্রশাসন। গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম জাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসিকতা প্রদানের আবেদন আহবান করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন জমাদানের নিয়মাবলি উল্লেখ পূর্বক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে” বলে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পরপরই  তা নিয়ে শুরু ওঠে সমালোচনার ঝড়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যহীন দেশ গঠনের দিকে আগানোর পর এমন বৈষম্য মানতে পারছেন না তারা। শিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম লিখেছেন, আগে ছিলো মুক্তিযোদ্ধা কোটা এখন বৈষম্য বিরোধী কোটা। আরে ভাই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী তো যে যেভাবে পেরেছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিল, তাহলে আপনি ছবি দেখে কিভাবে সনাক্ত করবেন? শাহরিয়ার জামান রিয়াদ লিখেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকলে গায়ে লাগছে আর এখন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের অগ্রাধিকার দেবে মানে কি, মগের মুল্লুক নাকি?

কোটা বৈষম্য থাকবে না বলে আন্দোলন হলো আর এখন এই নোটিশের মানে কি? অনতিবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক নোটিশ প্রত্যাহার করে স্বচ্ছভাবে আবাসিকতা প্রদান করতে হবে নাহলে এর বিরুদ্ধে আবার আন্দোলন করতে বাধ্য হবো। এবিষয়ে ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে হল প্রশাসন বা প্রভোস্ট স্যারকে এবিষয়ে কোনো অনুরোধ বা সুপারিশ জানানো হয়নি। তিনি এই কাজটি করার আগে আমাদের কারো কাছে জিজ্ঞাসাও করেননি। আর আমরা যদি অনুরোধ করিও তবুও এ ধরনের সুবিধা দেওয়ার এখতিয়ার তিনি রাখেন না। যে স্পিরিট নিয়ে আমরা জুলাই আন্দোলন করেছি তার সাথে এই বিষয়টি কোন ভাবেই যায় না।

হল প্রশাসন এই কাজটি করেছিলো এবং তারা আবার সংশোধনীও দিয়েছে বলে শুনেছি। জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেখ জাকির হোসেন বলেন, ২ মাস আগে এরকম একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদেএ আলাদা কোন সুবিধা দেওয়া হবে না। কিন্তু ২৬ তারিখে বিজ্ঞপ্তি টাইপিংয়ের সময় ভুলবশত অগ্রাধিকারের বিষয়টি লেখা হয়েছে আর আমিও তাড়াহুড়ায় ভালোভাবে খেয়াল না করেই সই করে দিয়েছিলাম। এটা নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত ভূল, ইতোমধ্যেই সংশোধন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment